The Tell-Tale Heart (এক সত্যভাষণ) -Edgar Allan Poe

Posted: February 1, 2016 in অনুবাদ

আসলেই! –ভয়– প্রচন্ড, প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম আমি, এখনো পাচ্ছি; কিন্তু তাই বলে আমাকে পাগল বলবেন কেন? অসুখটা আমাকে অচল করেনি — বিকল হয় নি আমার চেতনাশক্তি– বরং আরও ধারালো করে তুলেছে আমার ইন্দ্রিয়কে। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে– আমার শ্রবণশক্তিকে। স্বর্গ-মর্ত্য-নরকের তাবৎ ধ্বনি আমার কানে এসে বাজে। তাহলে বলুন, কী করে আমি পাগল হই? আচ্ছা, মন দিয়ে শুনুন; কীভাবে পুরো গল্পটা ঠান্ডা মাথায়, সুস্থ মস্তিষ্কে বলি আমি আপনাকে।

আসলে ঠিক কীভাবে যে আমার মাথায় এই চিন্তাটা এলো, বলে বোঝাতে পারব না। কিন্তু এলো যখন, দিন-রাত তাড়া করে বেড়াতে লাগল আমাকে। কোনো উদ্দেশ্য ছিল না, রাগও ছিল না কোনো। ভালবাসতাম আমি ঐ বুড়োটাকে। আমার উপর অত্যাচার করেনি কখনো। এমনকি অপমানও না। তার সোনা-দানার উপরও আমার কোনো লোভ ছিল না। যতটুকু আমার ধারণা, তার ঐ দুই চোখ! হ্যাঁ, ঐ ফ্যাঁকাসে-নীল চোখ দুটোর শকুনি দৃষ্টি– যখনই আমার উপর স্থির হতো, ভয়ে সারা শরীর আমার ঠান্ডা হয়ে যেত। তাই ধীরে ধীরে— ক্রমশ ধীরে— ঠিক করলাম, ওকে শেষই করে ফেলব, এই একটাই রাস্তা ঐ দুটো চোখের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার।

পাগলই ঠাওরাচ্ছেন তো আপনি আমাকে? আচ্ছা পাগলরা কি কিছু জানে? ভালো করে লক্ষ্য করুন তো। আপনার তো খেয়াল করা উচিৎ যে আমি কীভাবে এগোচ্ছিলাম– কতটা সাবধানতার সাথে– কতটা পারদর্শিতার সাথে– কতটা কপটতা দেখিয়েছি আমি প্রতিদিন কাজে গিয়ে। জীবনে আমি এত দরদ দেখাইনি তার জন্য যতটা তাকে খতম করার আগের এক সপ্তাহ করেছি। আর প্রতিদিন মাঝরাতে উঠে আস্তে করে, যাতে ওর ঘুম না ভেঙে যায় এভাবে, ওর দরজার হুড়কো খুলে মাথা গলিয়ে দেখতাম ওকে। ওহ! আপনি হয়তো হাসতেন তখন আমার ধূর্ততা দেখলে। পুরো একটা ঘণ্টা লাগত আমার নিজের মাথাটা পুরোপুরি ঢুকিয়ে তাকে ভালোমতো দেখতে। বলুন তো, কোন পাগলের পক্ষে সম্ভব এতটা বুদ্ধির পরিচয় দেয়া? তারপর– লণ্ঠনের আলোটা কমিয়ে, একদম নিভু নিভু অবস্থায় নামিয়ে আনতাম, যাতে শুধু ঐ চোখদুটোর উপর একটু আলোর রশ্মি পড়ে, ঐ দুই শকুনি চোখ। টানা সাতটা রাত এভাবে কাটিয়েছি আমি– যদিও ঐ দু’চোখ বন্ধ ছিল বরাবরই, আর আমার কাজটা করাও সম্ভব হচ্ছিল না কারণ; কোন কষ্টই দেয় নি সে আমাকে, কিন্তু ঐ অভিশপ্ত চোখ! যখন ভোরের আলো ফুটত, শুরু হতো দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, নির্ভয়ে ঢুকে পড়তাম ওর ঘরে, অকপটে আলাপ চালাতাম। মধুর স্বরে সম্বোধন করতাম তাকে, খেয়াল করার চেষ্টা করতাম, রাতটা কেমন কাটল তার। বুঝতেই পারছেন, প্রকৃতপক্ষে সে গভীর মানিসকতার অধিকারী এক বৃদ্ধ, সুতরাং রোজ মধ্যরাতে তার ঘরে আমার আগমণ সে টের পেলেও পেতে পারে।

অষ্টম রাতে, খুব বেশী সতর্ক ছিলাম ওর দরজা খোলার সময়। ঘড়ির কাঁটা যেন দৌড়োচ্ছিল আমার আগে আগে। ঐ রাতের আগে, নিজের ক্ষমতার ব্যাপকতা, নিজের বিচক্ষণতার পরিচয় পাইনি এভাবে কখনো। নিজের জয়োল্লাস চেপে রাখতে রীতিমত কষ্টই হচ্ছিল আমার এটা ভেবে যে, আমি তার ঘরের দরজা খুলছি, একটু একটু করে, আর ঐ বুড়ো টেরই পাচ্ছে না আমার কান্ড-কীর্তি। মোটের উপর পুরো পরিকল্পনাটা একবার ঝালিয়ে নিচ্ছিলাম বিড়বিড় করে, ও হয়তো কিছু শুনে ফেলেছিল, চমকে উঠল ঘুমের মধ্যেই, পাশ ফিরল বিছানায়। আপনি হয়তো ভাবছেন যে আমি বোধহয় ফিরে গেছি– না। তার ঘর রীতিমত কয়লা-কালো অন্ধকারে ঢাকা (ডাকাতের ভয়ে জানালার কপাট সবসময় শক্ত করে বন্ধ থাকে তো, সেজন্য), তাই আমি জানতাম যে সে আমাকে দেখতে পাবে না, আর তাই আমি আস্তে আস্তে ফাঁক করতে থাকলাম দরজাটা। মাথা গলিয়ে দিলাম ওর ঘরে, লন্ঠনটার আলো জ্বালাব, তাড়াহুড়োয় বুড়ো আঙুলটা ফসকে গেল টিনের উপর। লাফিয়ে উঠল সে বিছানায়– “কে ওখানে?” চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলাম আমি কিছু না বলে। ঘণ্টাখানেক এভাবে কেটে গেল, একটা আঙুলও নড়ালাম না, আর তাকেও শুয়ে পড়তে শুনলাম না। সে তখনো বসে আছে খাটে, কিছু কানে আসার অপেক্ষায়; যেভাবে আমি করতাম, রাতের পর রাত, দরজায় মৃত্যুর কড়া নাড়ার আওয়াজ শোনার জন্যে।

হটাৎ গুঙিয়ে উঠল ও, আমি জানতাম এই কাতরতা কোন ব্যথা বা কষ্টের কারণে নয়, এই আর্তনাদ আতঙ্কের। মৃত্যুভয় যখন জীবনের মায়ার উপর আঘাত হানে, তার ভয়ঙ্কর প্রতিধ্বনি দাপিয়ে বেড়ায় মনের অলিগলিতে; সেই ত্রাসের কবলে পড়েছি আমিও। খুব ভালো করেই চিনি ঐ অভিশঙ্কার সেই রূপ। আর তাই বুঝতে পারছিলাম এই বুড়োর মনের উপর দিয়ে কী ঝড় বয়ে যাচ্ছে, মনে মনে হেসে উঠলাম, খানিকটা করুণাও হচ্ছিল সেই সাথে। আমি জানতাম যে প্রথম সেই শব্দটা কানে ঢোকার পর থেকে সে জেগেই আছে, ভয় আস্তে আস্তে গ্রাস করে ফেলছিল ওকে। নিজেকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছে– “চিমনিতে বাতাসের কারণে কোন শব্দ হয়েছে হয়তো— কোন ইঁদুর হয়তো মেঝের উপরে হেঁটে গেছে” অথবা “কোন ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজই হবে”। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিজের অস্থিরতাকে বাগে আনতে, কিন্তু মন তো মানছে না। মানবেও না। কারণ ‘মৃত্যু’ তার কালো-ছায়ায় আচ্ছন্ন করে ফেলেছে ওকে, নিজের শিকারকে ঘিরে ধরেছে চতুর্দিক থেকে। আর সেই অদৃশ্য প্রতিবিম্বের কল্যাণেই হয়তো কিছু না দেখেই, না শুনেই, আমার উপস্থিতি ও অনুভব করতে পেরেছিল।

ধৈর্য ধরে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার একটু ঠেললাম দরজাটা, মাকড়সার জালের সুতোর মতো ক্ষীণ এক আলোর রশ্মি ঢুকল ওর ঘরে, পড়ল ঐ শকুনি চোখের উপর। চোখদুটো খোলা– পুরোপুরি খোলা– উন্মত্ত হয়ে উঠলাম আমি সেই দৃশ্য দেখে। সেই ঘোলাটে নীল, বীভৎস এক আবরণে ঢাকা– আমার অস্থিমজ্জা পর্যন্ত ঠান্ডায় জমিয়ে দিল ঐ চাহনি। বুড়োর মুখের বা শরীরের আর কোথাও আলোর আভাস পড়ে নি, তাই আমার নজরেও পড়ে নি, যেন আগে থেকেই ঠিক করে রাখা যে এমনটা ঘটবে, এমনভাবে ঠিকঠাক জায়গাতেই পড়বে লন্ঠনের আলো! আগেই আপনাকে বলেছিলাম না যে পাগলামি আর ইন্দ্রিয়ানুভুতির সূক্ষদর্শিতা এক ব্যাপার নয়? যাই হোক, তখন আমার কানে চাপা একটা শব্দ আসতে থাকল, একটা ঘড়িকে তুলোয় মুড়িয়ে রাখলে যেমন আওয়াজ শোনা যায়, ঠিক তেমন। ভালোমতই বুঝতে পারলাম কিসের শব্দ সেটা, ঐ বুড়োর হৃদকম্পনের ধ্বনি। শব্দটা আমার কানে বাজতেই আরো ক্ষিপ্ত করে তুলল আমাকে, ঠিক যেভাবে ঢাকের শব্দে সৈনিকেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে উদ্দীপনায়।

কিন্তু আমি তখনো নিজেকে সংযত রাখলাম, দাঁড়িয়ে থাকলাম চুপচাপ। নিঃশ্বাসও বোধহয় ফেলছিলাম না তখন। লন্ঠনটাকে শক্ত করে ধরে রাখলাম যাতে না নড়ে, চেষ্টা করছিলাম তার চোখের উপর থেকে আলোটা যাতে সড়ে না যায়। এরই মাঝে তার হৃৎপিণ্ডের নারকীয় স্পন্দন বেড়ে চলেছিল দ্রুত তালে। প্রতি মুহুর্তে আরো বেগবান, তীক্ষ্ণ হয়ে উঠছিল সেই শব্দ। আপনি বোধহয় ভাবছেন যে আমি স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম, আসলেই তাই। এবং রাতের শেষ ভাগে, ঐ পুরনো বাড়ির ভয়াবহ নৈঃশব্দের মাঝে, এই অদ্ভুত শব্দ আমাকে প্রচন্ড চাপে ফেলে দিল, নিজের ভেতরের ভয়টা যেন আমার অবাধ্য হয়ে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে শুরু করল। কিন্তু তবু কয়েক মিনিট নিশ্চুপ থেকেই কাটালাম, তবে আওয়াজটা যেন বেড়েই চলেছে, বেড়েই চলেছে। আমার তো তখন ভয় হল যে পাশের বাড়ির মানুষেরাও এই শব্দ শুনে ফেলে কী না! সময় হয়ে এসেছে ঐ বুড়োর। এক চিৎকার দিয়ে লন্ঠনটা ছুড়ে ফেললাম এক দিকে, ঝাঁপিয়ে পড়লাম ঘরের ভেতর, সে শুধু একবার, একবার আর্তনাদ করে উঠল; এক ধাক্কায় তাকে ফেলে দিলাম মেঝেতে, উপুড় করে দিলাম খাটটা তার উপর। আনন্দে হেসে উঠলাম আমি, কিন্তু তখনো তার হৃদকম্পনের ভোঁতা আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। সেই শব্দে কিছু আসে যায় না, এ তো আর দেয়ালের ওপাশ থেকে শোনা যাবে না। একসময় থেমে এলো তা। বিছানা উঠিয়ে ওকে পরীক্ষা করলাম, হ্যাঁ, মরেছে বুড়োটা। ওর হৃৎপিণ্ডের ওপর হাত রেখে বসে থাকলাম অনেকক্ষণ। নাহ, নেই। কোন স্পন্দন নেই ওর শরীরে। পাথরের মতোই নিষ্প্রাণ এক জড় পদার্থে পরিণত হয়েছে তখন ও।

আপনি কি এখনো আমাকে পাগল ভাবছেন? ওর দেহটা সরিয়ে ফেলতে আমি কী কী করেছি সেসব পুরোটা শুনলে আর আমাকে পাগল ভাবার জো নেই। রাত শেষ হয়ে এসেছে তখন, আর আমিও হাত চালাচ্ছিলাম তাড়াতাড়ি, কিন্তু নিঃশব্দে। ওর পুরো শরীরটা টুকরো টুকরো করে ফেললাম; হাত, মাথা, পা– সব। এরপর ওর চেম্বারের মেঝের তিনটা তক্তা তুললাম, ঢুকিয়ে দিলাম সবকিছু সেগুলোর নিচে। তারপর আবার তক্তাগুলো বসিয়ে দিলাম ঠিকঠাকমতো, এতোটা নিপুণভাবে, ধূর্ততার সাথে যে কোন মানসচক্ষু– এমনকি ঐ বুড়োর চোখও– কোন কিছু বুঝতে পারবে না। ধোয়া-মোছা করার মতো কিছু ছিল না– কোন দাগ– কোন রক্তের ছাপ– কিচ্ছু না। একটু বেশিই সতর্ক ছিলাম হয়তো এ ব্যাপারে। এই সমস্ত শেষ করতে করতে চারটা বেজে গেল, তখনো রাত। ঘড়িটা ঘণ্টা বাজিয়ে যখন জানান দিল সময়, তখনই কেউ কড়া নাড়ল বাইরের দরজায়। বেশ খুশি মনে দরজা খুলতে গেলাম, এখন আর কি নিয়ে ভয় পাব আমি? তিনজন লোক ঢুকলেন ঘরের ভেতর, বিনয়ের সাথে নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিলেন। এক প্রতিবেশী নাকি মাঝরাতে চিৎকার শুনেছেন এ বাড়ি থেকে, তাই সন্দেহের বশে পুলিশকে জানিয়েছেন, আর সেজন্য তাঁরা বাড়িটা একবার ঘুরে দেখতে চান। হেসে উঠলাম– এখন আর কি নিয়ে ভয় পাব? আমি স্বাগতম জানালাম তাঁদের। বললাম যে চিৎকারটা ছিল আমার, ঘুমের ভেতর চেঁচিয়ে উঠেছিলাম, আর বুড়ো? সে তো দেশের বাইরে আছে! পুরো বাড়ি তাঁদের তল্লাশি করতে দিলাম ভালোমতো, এমনকি নিয়ে গেলাম ঐ চেম্বারেও। তাঁর দলিল-দস্তাবেজ, সম্পত্তি সব দেখালাম। আত্মবিশ্বাসের উদ্দীপনায় চেয়ার টেনে বসালাম তাঁদের সেখানেই, এমনকি স্পর্ধার চোটে আমি নিজে বসলাম ঠিক ঐ তক্তাগুলোর ওপরই।

অফিসাররা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন আমার ব্যবহারে। বেশ সহজভাবেই অন্যান্য ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে তাঁদের সাথে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু হটাৎ এক আশঙ্কা ঘিরে ধরল আমাকে, চাচ্ছিলাম তাঁরা যাতে চলে যান। মাথা ধরেছিল খুব, কানে কী যেন একটা আওয়াজ ভেসে আসছে। তবু তাঁরা বসে কথা বলে যাচ্ছিলেন। শব্দটা স্পষ্ট হতে লাগল ধীরে ধীরে। আমি স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে লাগলাম এই অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে। কিন্তু আওয়াজটা বেজে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই! একসময় মনে হল আমার কানের ভেতরেই হচ্ছে বোধহয় শব্দটা। আতঙ্কে আমি ফ্যাঁকাসে হয়ে গেলাম, কিন্তু অনর্গল কথা চালাতে থাকলাম তাঁদের সাথে, বরং আরো উঁচু স্বরে। আওয়াজটা বেড়ে চলল তবু– কি করব আমি তখন? চাপা, দ্রুত তালে বাজছে শব্দটা, একটা ঘড়িকে তুলোয় মুড়িয়ে রাখলে যেমন আওয়াজ শোনা যায়, ঠিক তেমন। হাঁপাতে শুরু করলাম তখন, কিন্তু অফিসারেরা শুনলেনই না কিছু। আমি ক্ষিপ্রবেগে কথা বলতে লাগলাম, আর ঐ শব্দ? তা তো বেড়েই চলেছে। উঠে দাঁড়ালাম, তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে উগ্রভাবে তর্ক শুরু করলাম তখন। তাঁরা চলে যাচ্ছেন না কেন? মেঝের উপর লম্বা লম্বা পা ফেলে এদিক-ওদিক হাঁটতে থাকলাম, যেন ঐ লোকগুলোর চিন্তা-ভাবনার ধরণে প্রচন্ড রেগে গেছি। আর সেই শব্দ! হায় ঈশ্বর! কী করব আমি? প্রলাপ বকতে থাকলাম– দিব্যি দিতে লাগলাম– যেটাতে আমি বসে ছিলাম, সেই চেয়ারটা তুলে ঘষতে থাকলাম মেঝের সাথে। কিন্তু প্রবল থেকে প্রবলতর হতে থাকল ধ্বনি। আর লোকগুলো তখনো মৃদু হেসে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন, এটা কী করে সম্ভব যে তাঁরা ঐ আওয়াজটা শুনলেনই না? ওহ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! — না না! তাঁরা শুনেছিলেন! — সন্দেহ করেছিলেন তাঁরা! — ওঁরা জানতেন আগেই! আমার আতঙ্কে বিদ্রুপ করছিলেন ওঁরা! আমি এটাই ভেবেছিলাম তখন, এবং এখনো ভাবি। কিন্তু এই নিদারুণ যন্ত্রণার কাছে বাকি এসব তুচ্ছ। ঐ কুটিল উপহাসগুলো আর সহ্য হচ্ছিল না। আমার মনে হল হয় চেঁচিয়ে উঠি না হয় মরি। আর তারপর– আবার! আবার ঐ শব্দ! আবার!

“হতচ্ছাড়া পাজির দল!” চিৎকার করে উঠলাম, “আর ভনিতার কোন দরকার নেই! স্বীকার করছি আমি সবকিছু! –তুলে ফেলুন এই তক্তাগুলো– হ্যাঁ হ্যাঁ এখানেই– ওর ঐ জঘন্য হৃৎপিণ্ড!”

Comments
  1. এলান পো’র গল্প মানেই একটু আলাদা কিছু

    Liked by 1 person

  2. মৌ says:

    ভুতের তো নয় ভয়ের বটে, এটা পড়িনি আগে। বাংলা পেয়ে ইংলিশটা আর ধরলাম না।

    Liked by 1 person

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.